- 1 নিরাশ না হয়ে তাদের য়ে সব সময় প্রার্থনা করা উচিত, তা বোঝাতে গিয়ে যীশু তাদের এই দৃষ্টান্তটি দিলেন,
- 2 তিনি বললেন, ‘কোন এক শহরে একজন বিচারক ছিলেন৷ তিনি ঈশ্বরকে ভয় করতেন না, আবার মানুষকে গ্রাহ্য করতেন না৷
- 3 সেই শহরে একজন বিধবা ছিল৷ সে বার বার সেই বিচারকের কাছে এসে বলত, ‘আপনাকে দেখতে হবে য়েন আমার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি ন্যায় বিচার পাই!’
- 4 কিছু দিন ধরে সেই বিচারক তার কোন কথাই শুনতে চাইলেন না৷ কিন্তু এক সময় তিনি মনে মনে বললেন, ‘যদিও আমি ঈশ্বরকে ভয় করি না আর মানুষকে মানি না,
- 5 তবু এই বিধবা যখন আমায় এত বিরক্ত করছে তখন আমি দেখব সে য়েন ন্যায় বিচার পায়, তাহলে সে আর বার বার এসে আমাকে জ্বালাতন করবে না৷”
- 6 এরপর প্রভু বললেন, ‘লক্ষ্য কর! ঐ অধার্মিক বিচারকর্তা কি বলল৷
- 7 তাহলে ঈশ্বর কি তাঁর মনোনীত লোকেরা, যাঁরা দিন-রাত তাঁকে ডাকছে, তারা য়েন ন্যায় বিচার পায় তা দেখবেন না? তিনি কি তাদের সাহায্য করতে অযথা দেরী করবেন?
- 8 আমি তোমাদের বলছি, তিনি তাদের পক্ষে ন্যায় বিচার করবেনই আর তা তাড়াতাড়িই করবেন৷ যাইহোক, মানবপুত্র যখন আসবেন, তখন কি তিনি এই পৃথিবীতে বিশ্বাস দেখতে পাবেন?’
- 9 যাঁরা নিজেদেরকে ধার্মিক মনে করত আর অন্যকে তুচ্ছ করত, তাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই দৃষ্টান্তটি দিলেন,
- 10 ‘দুজন লোক মন্দিরে প্রার্থনা করার জন্য গেল; তাদের মধ্যে একজন ফরীশী আর অন্য জন কর-আদায়কারী৷
- 11 ফরীশী দাঁড়িয়ে নিজের সম্বন্ধে এইভাবে প্রার্থনা করতে লাগল, ‘য়ে ঈশ্বর, আমি তোমায় ধন্যবাদ দিচ্ছি য়ে আমি অন্য সব লোকদের মতো নই; দস্য়ু, প্রতারক, ব্যভিচারী অথবা এই কর-আদায়কারীর মতো নই৷
- 12 আমি সপ্তাহে দুদিন উপোস করি, আর আমার আয়ের দশ ভাগের একভাগ দান করি৷’
- 13 ‘কিন্তু সেই কর-আদায়কারী দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে মুখ তুলে তাকাতেও সাহস করল না, বরং সে বুক চাপড়াতে চাপড়াতে বলল, ‘হে ঈশ্বর, আমি পাপী! আমার প্রতি দযা কর!’
- 14 আমি তোমাদের বলছি, এই কর-আদায়কারী ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়ে বাড়ি চলে গেল কিন্তু ঐ ফরীশী নয়৷ য়ে কেউ নিজেকে বড় করে তাকে ছোট করা হবে; আর য়ে নিজেকে ছোট করে তাকে বড় করা হবে৷’
- 15 লোকেরা একসময় তাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যীশুর কাছে নিয়ে এল য়েন তিনি তাদের স্পর্শ করে আশীর্বাদ করেন৷ এই দেখে শিষ্যরা তাদের খুব ধমক দিলেন৷
- 16 কিন্তু যীশু সেই ছেলেমেয়েদের তাঁর কাছে ডাকলেন, আর বললেন, ‘ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের আমার কাছে আসতে দাও, তাদের বারণ করো না, কারণ এই শিশুদের মতো লোকদের জন্যই তো ঈশ্বরের রাজ্য৷
- 17 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি কেউ শিশুর মতো ঈশ্বরের রাজ্যকে গ্রহণ না করে তবে সে কোনমতে তার মধ্যে প্রবেশ করতে পারবে না!’
- 18 ইহুদীদের একজন দলনেতা তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘হে সদগুরু, অনন্ত জীবন পেতে হলে আমাকে কি করতে হবে?’
- 19 যীশু তাঁকে বললেন, ‘তুমি আমায় সত্ বলছ, কেন? ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ সত্ নয়৷
- 20 তুমি তো ঈশ্বরের সব আজ্ঞা জান, ব্যভিচার কোর না, নরহত্যা করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষী দিও না, তোমরা বাবা-মাকে সম্মান করো৷”
- 21 সে বলল, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই সে সব পালন করে আসছি৷’
- 22 একথা শুনে যীশু তাকে বললেন, ‘কিন্তু তোমার মধ্যে একটি বিষয়ের এখনও ত্রুটি আছে৷ তোমার যা কিছু আছে সে সব বিক্রি করে তা গরীবদের মধ্যে বিলিয়ে দাও, তাহলে স্বর্গে তোমার ধন-সম্পদ জমা হবে, তারপর আমায় অনুসরণ কর৷’
- 23 কিন্তু এই কথা শুনে তার খুবই দুঃখ হল, কারণ তার প্রচুর ধন-সম্পদ ছিল৷
- 24 যীশু তাকে দুঃখিত হতে দেখে বললেন, ‘যাদের ধন-সম্পদ আছে তাদের পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা কত কঠিন!
- 25 হ্যাঁ, একজন ধনীর পক্ষে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করা অপেক্ষা ছুঁচের মধ্য দিয়ে উটের পার হওযা সহজ৷’
- 26 য়ে সব লোক একথা শুনল তারা বলে উঠল, ‘তাহলে কে উদ্ধার পেতে পারে?’
- 27 যীশু বললেন, ‘মানুষের পক্ষে যা সন্ভব নয় ঈশ্বরের পক্ষে তা সন্ভব৷’
- 28 তখন পিতর বললেন, ‘দেখুন, আমরা তো সব কিছু ছেড়ে ছুড়ে আপনার অনুসারী হয়েছি৷’
- 29 যীশু তখন তাদের বললেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি যাঁরা ঈশ্বরের রাজ্যের জন্য ঘর-বাড়ি, স্ত্রী, ভাই-বোন, মা-বাবা কিংবা ছেলে-মেয়ে ত্যাগ করেছে,
- 30 তারা প্রত্যেকে এ জীবনেই সেই সব বহুগুণে ফিরে পাবে, এছাড়া আগামী যুগে লাভ করবে অনন্ত জীবন৷’
- 31 যীশু তাঁর বারোজন প্রেরিতকে একপাশে ডেকে নিয়ে গিয়ে বললেন, ‘শোন! আমরা জেরুশালেমে যাচ্ছি; আর ভাববাদীরা মানবপুত্রের বিষয়ে যা কিছু লিখে গেছেন, সে সবই পূর্ণ হবে৷
- 32 হ্যাঁ, অইহুদীদের হাতে তাঁকে তুলে দেওযা হবে, তারা তাঁকে উপহাস করবে, গালাগালি দেবে, তাঁর গায়ে থুতু ছেটাবে৷
- 33 তারা তাঁকে কশাঘাত করবে ও শেষ পর্যন্ত হত্যাই করবে; আর তৃতীয় দিনে মৃত্যুর মধ্য থেকে তিনি পুনরুত্থিত হবেন৷’
- 34 তিনি কি বলতে চাইছেন, প্রেরিতেরা কিন্তু তার কিছুই বুঝতে পারলেন না৷ তিনি য়ে কি বলছেন তা তাঁরা বুঝতে পারলেন না, কারণ এসব কথার অর্থ তাদের কাছে গোপন রাখা হয়েছিল৷
- 35 যীশু যখন যিরীহোর কাছাকাছি পৌঁছালেন, তখন সেখানে রাস্তার ধারে বসে একজন অন্ধ ভিক্ষা করছিল৷
- 36 অনেক লোকজন যাওযার আওযাজ শুনে সেই ভিখারী ব্যাপার কি তা জিজ্ঞাসা করল৷
- 37 লোকেরা তাঁকে বলল, ‘নাসরতীয় যীশু সেখান দিয়ে যাচ্ছেন৷’
- 38 তখন সে চিত্কার করে বলে উঠল, ‘হে দাযূদের বংশধর যীশু, আমাকে দয়া করুন৷’
- 39 য়ে সব লোক সেই ভীড়ের সামনে ছিল তারা তাকে চুপ করতে বলল, কিন্তু সে আরও চিত্কার করে বলল, ‘হে দাযূদের বংশধর আমায় দয়া করুন!’
- 40 যীশু থেমে গেলেন, তিনি সেই অন্ধকে তাঁর কাছে নিয়ে আসতে বললেন৷ সেই অন্ধ তাঁর কাছে এলে পর তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
- 41 ‘তুমি কি চাও? তোমার জন্য আমি কি করব?’সে বলল, ‘প্রভু, আমি য়েন দেখতে পাই৷’
- 42 যীশু তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি চোখে দেখতে পাও, তোমার বিশ্বাসই তোমাকে সুস্থ করল৷’
- 43 সঙ্গে সঙ্গে সে দেখতে পেল আর ঈশ্বরের প্রশংসা করতে করতে যীশুর পেছনে পেছনে চলল৷ যাঁরা এই ঘটনা দেখল তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতে লাগল৷
Luke 18
- Details
- Parent Category: New Testament
- Category: Luke
লুক অধ্যায় 18