wheel

AJC Publications and Media Portal

 

But the Comforter, which is the Holy Ghost, whom the Father will send in my name, he shall teach you all things,
and bring all things to your remembrance, whatsoever I have said unto you. John 14:26


রাজাবলি ১অধ্যায় 11
  • 1 রাজা শলোমন নারীদের সান্নিধ্য পছন্দ করতেন| তিনি এমন অনেক মহিলাকে ভালোবেসে ছিলেন যারা ইস্রায়েলের বাসিন্দা নয়| মিশরের ফরৌণের কন্যা ছাড়াও শলোমন হিত্তীয়, মোয়াবীয়া, অম্মোনীয়া, ইদোমীয়া, সীদোনীযা প্রভৃতি অনেক বিজাতীয রমণীকে ভালোবাসতেন|
  • 2 অতীতে প্রভু ইস্রায়েলের লোকদের এ ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, “তোমরা অন্য দেশের লোকদের বিয়ে করবে না, কারণ তাহলে ওরা তাদের মূর্ত্তিকে পূজা করতে তোমাদের প্রভাবিত করবে|” কিন্তু তা সত্ত্বেও শলোমন বিজাতীয রমনীদের প্রেমে পড়েন|
  • 3 শলোমনের 700 জন স্ত্রী ছিল| (যারা সকলেই অন্যান্য দেশের নেতাদের কন্যা|) এছাড়াও তাঁর 300 জন ক্রীতদাসী উপপত্নী ছিল| শলোমনের পত্নীরা তাঁকে ঈশ্বর বিমুখ করে তুলেছিল|
  • 4 শলোমনের তখন বয়স হয়েছিল, স্ত্রীদের পাল্লায় পড়ে তিনি অন্যান্য মূর্ত্তির পূজা করতে শুরু করেন| তাঁর পিতা রাজা দায়ূদের মতো একনিষ্ঠ ভাবে শলোমন শেষ পর্য়ন্ত প্রভুকে অনুসরণ করেন নি|
  • 5 শলোমন সীদোনীয় দেবী অষ্টোরত এবং অম্মোনীয়দের ঘৃণ্য পাষাণ মূর্ত্তি মিল্কমের অনুগত হন|
  • 6 অতএব শলোমন প্রভুর সামনে ভুল কাজ করলেন| তিনি পুরোপুরি প্রভুর শরণাগত হননি য়ে ভাবে তাঁর পিতা দায়ূদ হয়েছিলেন|
  • 7 এমনকি তিনি মোয়াবীয়দের ঘৃণ্য মূর্ত্তি কমোশের আরাধনার জন্য জেরুশালেমের পাশেই পাহাড়ে একটা জায়গা বানিয়ে দিয়েছিলেন| ঐ একই পাহাড়ে তিনি ঐ ভযংকর মূর্ত্তির আরাধনার জন্যও একটি জায়গা বানিয়ে ছিলেন|
  • 8 এই ভাবে রাজা শলোমন তাঁর প্রত্যেকটি ভিন্দেশী স্ত্রীর আরাধ্য মূর্ত্তির জন্য একটি করে পূজোর জায়গা করে দেন, আর তাঁর স্ত্রীরা ধূপধূনো দিয়ে সেই সব জায়গায় তাদের মূর্ত্তিসমূহের কাছে বলিদান করত|
  • 9 এই ভাবে রাজা শলোমন প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বরের, কাছ থেকে দূরে সরে গিয়েছিলেন| সুতরাং প্রভু শলোমনের প্রতি খুব ক্রুদ্ধ হলেন| তিনি দুবার শলোমনকে দেখা দিয়ে,
  • 10 তাঁকে অন্য মূর্ত্তির পূজা করতে নিষেধ করা সত্ত্বেও শলোমন সেই নিষেধ মানেন নি|
  • 11 তখন প্রভু শলোমনকে বললেন, “শলোমন, তুমি চুক্তি ভঙ্গ করেছ| তুমি আমার আদেশ মেনে চলো নি| আমিও কথা দিলাম তোমার রাজত্ব তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব এবং আমি তা তোমার কোন একটি ভৃত্যের হাতে তুলে দেব| কিন্তু য়েহেতু আমি তোমার পিতা দায়ূদকে ভালোবাসতাম আমি তোমার জীবদ্দশায় তোমার রাজ্য তোমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেব না| তোমার সন্তান রাজা না হওয়া পর্য়ন্ত আমি অপেক্ষা করব| আর তারপর আমি তার কাছ থেকে এই রাজত্ব কেড়ে নেব|
  • 12
  • 13 তবে আমি তার কাছে থেকে গোটা রাজত্ব কেড়ে নেব না, তার শাসন করার জন্য একটি পরিবারগোষ্ঠী রেখে দেব| দায়ূদের কথা ও জেরুশালেমের কথা ভেবেই আমি এই অনুগ্রহ করব| কারণ দায়ূদ আমার পরম অনুগত সেবক ছিল| আর তাছাড়া এই জেরুশালেম শহরকে আমি নিজেই বেছে নিয়েছিলাম|
  • 14 সে সময় প্রভু ইদোমীয় হদদকে শলোমনের শত্রু করে তুললেন| হদদ ছিলো ইদোমের রাজপরিবারের সন্তান|
  • 15 এক সময় দায়ূদ ইদোমকে পরাজিত করেছিলেন| তাঁর সেনাবাহিনীর প্রধান য়োয়াব তখন ইদোমে নিহতদের কবর দিতে যান| সে সময় ইদোমে অবশিষ্ট যারা জীবিত ছিল য়োয়াব তাদেরও হত্যা করেছিলেন|
  • 16 য়োয়াব ও ইস্রায়েলের লোকরা সে সময়ে 6 মাস ইদোমে ছিলেন| এইসময়ে তারা সমস্ত ইদোমীয়দের হত্যা করেন.
  • 17 সে সময়ে হদদ ছিল নেহাতই শিশু| সে মিশরে পালিয়ে যায়| তার পিতার কিছু ভৃত্যও তখন তার সঙ্গে গিয়েছিল|
  • 18 মিদিয়ন পার হয়ে তারা পারণে গিয়ে পৌঁছলে আরো কিছু লোক তাদের সঙ্গে য়োগ দেয়| তারপর এই গোটা দলটি মিশরে গিয়ে ফারৌণের সাহায্য প্রার্থনা করল| ফরৌণ হদদকে একটা বাড়ি ও কিছু জমি ছাড়াও তার খাবার-দাবার দেখাশোনার ব্যবস্থা করেন|
  • 19 ফরৌণ হদদকে খুবই পছন্দ করতেন| তিনি তাঁর শালীর সঙ্গে হদদের বিয়ে দিয়েছিলেন| (রাণী তহপনেষ ফরৌণের স্ত্রী ছিলেন|)
  • 20 ফরৌণের স্ত্রী তহপনেষের বোনকে হদদ বিয়ে করার পর গনুবত্‌ নামে তার একটি পুত্র হয়| রাণী তহপনেষ গনুবত্‌কে ফরৌণের প্রাসাদে তাঁর নিজের সন্তানদের সঙ্গে মানুষ হতে দিয়েছিলেন|
  • 21 এদিকে মিশরে থাকাকালীন হদদ দায়ূদের মৃত্যু সংবাদ পেল| সেনাপতি য়োয়াবের মৃত্যুর খবরও তার কানে পৌঁছাল| তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “আমাকে আমার নিজের দেশের বাড়িতে ফিরে য়েতে দিন|
  • 22 কিন্তু ফরৌণ তার উত্তরে বললেন, “আমি তোমাকে এখানে তোমার যা কিছু প্রয়োজন তা দিয়েছি| তবু কেন তুমি তোমার নিজের দেশে ফিরে য়েতে চাইছ?হদদ মিনতি করে বলল, “দয়া করে আমায় বাড়িতে ফিরতে দিন|
  • 23 ইলিয়াদার পুত্র রষোণকেও ঈশ্বর শলোমনের শত্রু করে তুলেছিলেন| রষোণ তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে এসেছিল|
  • 24 দায়ূদ সোবার সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে হারানোর পর রষোণ কিছু লোকদের জোগাড় করে একটা ছোট সেনাবাহিনীর প্রধান হয়ে বসেন| এরপর রষোণ দম্মেশকে গিয়ে সেখানকার রাজা হন|
  • 25 রষোণ অরামে রাজত্ব করতেন ও ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর তীব্র বিদ্বেষ ছিল| যে কারণে শলোমনের জীবদ্দশায় রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিলেন| রষোণ ও হদদ দুজনেই ইস্রায়েলে নানান ঝামেলা পাকিযেছিলেন|
  • 26 নবাটের পুত্র যারবিয়াম ছিল শলোমনের জনৈক ভৃত্য| সরেদানিবাসী যারবিয়াম ছিল ইফ্রয়িমীয পরিবারগোষ্ঠীর লোক| তার বিধবা মায়ের নাম ছিল সরূযা| এই যারবিয়ামও রাজার বিপক্ষে য়োগ দিয়েছিল|
  • 27 এই হল সেই গল্প, কেন যারবিয়াম রাজার বিরুদ্ধে গেল| শলোমন তখন মিল্লো নির্মাণ করছিলেন এবং দায়ূদ, তাঁর পিতার নামে শহরের দেওয়াল গাঁথছিলেন|
  • 28 যারবিয়াম য়থেষ্ট শক্তসমর্থ ছিল এবং শলোমন দেখলেন, ‘এই তরুণটি একজন সুদক্ষ কর্মী|’ তখন তিনি যারবিয়ামকে য়োষেফ পরিবারগোষ্ঠীর কর্মীদের অধ্যক্ষ করে দিলেন|
  • 29 এক দিন যখন যারবিয়াম জেরুশালেম থেকে বাইরে যাচ্ছিল তখন শীলোনীয ভাববাদী অহিযের সঙ্গে তার পথে দেখা হল| অহিয একটি নতুন জামা পরেছিলেন|
  • 30 সেই জনশূন্য প্রান্তরে অহিয তাঁর নতুন জামাটিকে ছিঁড়ে বারোটি টুকরো করেন|
  • 31 তারপর যারবিয়ামকে বললেন, “জামার 10 টি টুকরো তোমার নিজের জন্য নাও| প্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ‘আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজ্য কেড়ে নিয়ে তোমায় 10 টি পরিবারগোষ্ঠী দিয়ে দেব|
  • 32 আমি দায়ূদের উত্তরপুরুষদের শুধুমাত্র একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করতে দেব| আমার পরমভক্ত দায়ূদ ও জেরুশালেমের মুখের দিকে তাকিযে আমি এটুকু করব| ইস্রায়েলের সমস্ত পরিবারগোষ্ঠীর থেকে আমিই বয়ং জেরুশালেমকে বেছে নিয়েছিলাম|
  • 33 আমি শলোমনের কাছ থেকে রাজত্ব কেড়ে নেব কারণ শলোমন আমার উপাসনা বন্ধ করেছে| শলোমন সীদোনীয়দের মূর্ত্তি অষ্টোরত, মোয়াবীয়দের মূর্ত্তি কমোশ ও আম্মোনীযদের মিলকমের আরাধনা করছে| শলোমন ভালো ও সঠিক কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে| সে আর এখন আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলে না| ওর পিতা দায়ূদ য়ে ভাবে জীবনযাপন করেছিল শলোমন আর সে ভাবে জীবনযাপন করে না|
  • 34 একারণেই আমি শলোমনের পরিবারের হাত থেকে রাজ্য কেড়ে নেব| কিন্তু আমার একনিষ্ঠ ভক্ত শলোমনের পিতা দায়ূদের কথা মনে রেখে শলোমনকে তার বাকী জীবনটুকু শাসক থাকতে দেব|
  • 35 তবে তার পুত্রের হাত থেকে আমি অবশ্যই রাজত্ব নিয়ে নেব| আর তারপর তার থেকে দশটি পরিবারগোষ্ঠী যারবিয়াম তোমাকে শাসন করতে দেব|
  • 36 শলোমনের সন্তান একটি পরিবারগোষ্ঠীর ওপর শাসন করবে| কারণ জেরুশালেমে য়ে শহরটি আমার নিজের বলে আমি বেছে নিয়েছিলাম সব সময়ই দায়ূদের কোনো উত্তরপুরুষ তা শাসন করবে|
  • 37 কিন্তু, তা বাদে, আমি তোমায় তোমার চাহিদা মত আর সমস্ত কিছুরই ওপর শাসন করতে দেব| তুমি ইস্রায়েলের উত্তর রাজ্যগুলি শাসন করবে|
  • 38 যদি তুমি সত্‌ পথে থেকে আমার নির্দেশ মেনে চলো, তাহলেই আমি তোমার জন্য এই সব করব| তুমি যদি দায়ূদের মতো আমার বিধি ও আদেশ মেনে চলো তাহলে আমি তোমার পাশে থাকব এবং তোমার বংশকে রাজবংশে পরিণত করব, য়েমন আমি দায়ূদের জন্য করেছিলাম| ইস্রায়েল আমি তোমার হাতে তুলে দেব|
  • 39 শলোমনের কৃতকার্য়ের জন্যই আমি দায়ূদের বংশধরদের শাস্তি দেব, তবে অবশ্যই তা বরাবরের জন্য নয়|”‘
  • 40 শলোমন যারবিয়ামকে হত্যা করার চেষ্টা করলেন| কিন্তু যারবিয়াম তখন মিশরে পালিয়ে গেল এবং শলোমনের মৃত্যু পর্য়ন্ত যারবিয়াম মিশররাজ শীশকের আশ্রয়ে ছিল|
  • 41 শলোমন তার শাসন কালে বহু বড় বড় কাজ করেছিলেন| সে সব কথা ‘শলোমনের ইতিহাস গ্রন্থে’ লিপিবদ্ধ আছে|
  • 42 শলোমন জেরুশালেমের অন্তর্গত ইস্রায়েলে 40 বছর রাজত্ব করেছিলেন|
  • 43 তারপর তিনি যখন মারা গেলেন তাঁকে দায়ূদ শহরে সমাধিস্থ করা হল| এরপর রাজা হলেন শলোমনের পুত্র রহবিয়াম|