wheel

AJC Publications and Media Portal

 

But the Comforter, which is the Holy Ghost, whom the Father will send in my name, he shall teach you all things,
and bring all things to your remembrance, whatsoever I have said unto you. John 14:26


সামুয়েল ১ অধ্যায় 20
  • 1 রামার তাঁবুগুলো থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন| য়োনথনের কাছে গিয়ে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আমি কি অন্যায় করেছি? কি আমার অপরাধ? কেন তোমার পিতা আমায় হত্যা করতে চাইছে?”
  • 2 য়োনাথন বলল, “এ হতেই পারে না| আমার পিতা তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে না| আমাকে কিছু না বলে সে কোন কাজই করে না| সে কাজ যতই সামান্য হোক, কি জরুরীই হোক, আমাকে সে সবই বলে| তাহলে তোমাকে মারার কথাই বা আমাকে সে বলবে না কেন? না, তোমার কথা ঠিক নয়|”
  • 3 কিন্তু দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা ভালভাবেই জানে যে আমি তোমার বন্ধু| তোমার পিতা মনে মনে ভেবেছে, য়োনাথন যেন আমার মতলব জানতে না পারে| যদি সে এর সম্পর্কে জানতে পারে, তার হৃদয় দুঃখে ভরে যাবে এবং সে দায়ূদকে জানিয়ে দেবে| কিন্তু তুমি এবং প্রভু যেমন নিশ্চিতভাবে জীবিত সেই রকম নিশ্চিতভাবেই আমার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে|”
  • 4 য়োনাথন বলল, “তুমি যা বলবে আমি তাই করব|”
  • 5 দায়ূদ বললেন, “শোন, কাল অমাবস্যার উত্সব| আমার রাজার সঙ্গে খাবার কথা আছে| কিন্তু সন্ধ্য়ে অবধি আমায় মাঠে লুকিয়ে থাকতে হবে|
  • 6 যদি তোমার পিতার চোখে পড়ে যে আমি নেই তবে তাঁকে বোলো, ‘দায়ূদ বৈত্‌লেহমে বাড়িতে যেতে চাইছিল, কারণ এই উপলক্ষ্যে ওর বাড়িতে খাওয়া দাওযা আছে| সে আমার কাছে বৈত্‌লেহমে তার পরিবারের কাছে যাবার অনুমতি চেয়েছিল|’
  • 7 যদি তোমার পিতা বলেন, ‘ভালই তো’ তবেই বুঝব আমার বিপদ কেটে গেছে| আর যদি রেগে যান তাহলে জেনে রেখো তিনি আমায় মারবেনই|
  • 8 য়োনাথন আমায় দয়া করো| আমি তোমার ভৃত্য| প্রভুর সামনে তুমি আমার সঙ্গে একটি চুক্তি করেছিলে| যদি আমি দোষী হই, তুমি তোমার নিজের হাতে আমাকে হত্যা কোরো, কিন্তু তোমার পিতার কাছে আমাকে নিয়ে যেও না|”
  • 9 য়োনাথন বলল, “না না, এ হতেই পারে না| যদি পিতার তোমাকে মারার মতলব আমি জানতে পারি তাহলে তোমায় সাবধান করে দেব|”
  • 10 দায়ূদ বললেন, “তোমার পিতা যদি তোমাকে কর্কশভাবে উত্তর দেন তাহলে কে আমায় সাবধান করবে?”
  • 11 য়োনাথন বলল, “চলো, মাঠে যাওয়া যাক|” য়োনাথন আর দায়ূদ মাঠে গেল|
  • 12 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রভুর সামনে আমি দিব্য দিয়ে বলছি, পিতা তোমাকে নিয়ে কি ভাবেন সব আমি জেনে নেব; তোমার ভাল চাইলেও জানতে পারব, মন্দ চাইলেও জানতে পারব| তারপর তিন দিনের মধ্যে তোমার কাছে মাঠে খবর পাঠাব|
  • 13 পিতা তোমাকে মারতে চাইলে তোমায জানাব| তুমি তখন বিনা বাধায পালাতে পারবে| আমার কথা রাখতে না পারলে প্রভু আমায় শাস্তি দেবেন| প্রভু তোমার সহায় হোন, যেমন তিনি আমার পিতার সহায়|
  • 14 যতদিন বেঁচে থাকবে আমার প্রতি দয়াশীল থেকো|
  • 15 আমার মৃত্যুর পর আমার পরিবারকে তোমার দয়া দেখাতে ভুলো না| প্রভু তোমার সমস্ত শত্রুকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করবেন|
  • 16 তখন য়োনাথন দাযূদের পরিবারের সঙ্গে এই মর্মে এক চুক্তি করল: দাযূদের শত্রুদের প্রভু যেন শাস্তি দেন|”
  • 17 এই বলে য়োনাথন দাযূদের কাছ থেকে আবার শুনতে চাইল ভালবাসার সেই অঙ্গীকার| য়োনাথন দায়ূদকে ভালবাসে, যেমন সে নিজেকে ভালবাসে|
  • 18 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “কাল অমাবস্যার উত্সব| তোমার আসন ফাঁকা থাকবে| তাহলেই আমার পিতা বুঝবে যে তুমি চলে গেছ|
  • 19 তৃতীয় দিনে ঐ একই জায়গায় তুমি লুকিয়ে থাকবে| সেদিন ঝামেলা হতে পারে| পাহাড়ের ধারে অপেক্ষা করবে|
  • 20 ঐ দিন আমি পাহাড়ে উঠবো| দেখাব যে আমি তীর ছুঁড়ে লক্ষ্যভেদ করছি| আমি কযেকটি তীর ছুঁড়বো|
  • 21 তারপর ঠিক্ঠাক্ চললে আমি ওকে বলব, ‘তুই বহু দূরে চলে গেছিস, তীরগুলো তো আমার অনেক কাছেই রযেছে| যা আবার ফিরে এসে ওগুলো নিয়ে আয|’ যদি তা বলি তবে তুমি আর লুকিয়ে থেকো না| প্রভুর দিব্য সেক্ষেত্রে তোমার কোন বিপদ হবে না|
  • 22 কিন্তু বিপদ যদি থাকে তাহলে ছেলেটিকে বলবো, ‘তীরগুলো আরো দূরে পড়ে আছে| যা ওগুলো নিয়ে আয|’ তখন তুমি অবশ্যই চলে যাবে| কারণ প্রভুই তোমাকে দূরে পাঠাচ্ছেন|
  • 23 তোমার ও আমার মধ্যে এই চুক্তি হল, তা মনে রেখো| প্রভু চিরজীবন আমাদের মধ্যে সাক্ষী রইলেন|”
  • 24 দায়ূদ মাঠে লুকিয়ে পড়লেন|অমাবস্যার উত্সবের দিন এলে রাজা খেতে বসলেন|
  • 25 দেওয়ালের পাশেই সচরাচর যে আসনেতে বসতেন রাজা সেই আসনেই বসলেন| য়োনাথন শৌলের মুখোমুখি বসেছিল| শৌলের পাশে বসেছিল অব্নের| কিন্তু দাযূদের জায়গাটা খালি ছিল|
  • 26 সেদিন শৌল কিছুই বললেন না| ভাবলেন, “নিশ্চয়ই দাযূদের কিছু হয়েছে| তাই সে শুচি হতে পারে নি|”
  • 27 পরদিন মাসের দোসরা| সেদিনও আবার দাযূদের জায়গা খালি রইল| শৌল তাঁর পুত্র য়োনাথনকে বললেন, “য়িশযের পুত্রকে কাল দেখি নি, আজও দেখছি না কেন? অমাবস্যার উত্সবে সে আসছে না কেন?”
  • 28 য়োনাথন বলল, “দায়ূদ আমাকে বলেছিল ও বৈত্‌লেহমে যাবে|
  • 29 সে বলেছিল, ‘আমি যাব, তুমি অনুমতি দাও| বৈত্‌লেহেমে আমার বাড়ির সকলে য়জ্ঞে বলি দেবে| আমার ভাই যেতে বলেছে| আমি যদি তোমার বন্ধু হই তাহলে আমাকে তুমি যেতে দাও, ভাইদের সঙ্গে দেখা হবে|’ তাই ও রাজার টেবিলে খেতে আসে নি|”
  • 30 শৌল য়োনাথনের উপর খুব রেগে গেলেন| তিনি তাকে বললেন, “নির্বোধ, হতভাগা ক্রীতদাসীর পুত্র| আমি জানি তুমি দাযূদের পক্ষে| তুমি, তোমার নিজের কলঙ্ক, তোমার মাযেরও কলঙ্ক|
  • 31 যতদিন য়িশযের পুত্র বেঁচে থাকবে, ততদিন তুমি না হবে রাজা, না পাবে রাজ্য| যাও, এক্ষুনি দায়ূদকে ধরে নিয়ে এসো কারণ সে মৃত্যুর সন্তান|”
  • 32 য়োনাথন বলল, “কেন দায়ূদকে মারতে হবে? সে কি করেছে?”
  • 33 এই কথা শুনে শৌল য়োনাথনের দিকে বল্লমটা ছুঁড়ে মারলেন| উদ্দেশ্য তাকেই মেরে ফেলা| এই থেকে য়োনাথন বুঝতে পারল, তার পিতা দায়ূদকে সত্যি মেরে ফেলতে চান|
  • 34 য়োনাথন রেগে গেল| সে টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ল| পিতার ব্যাপারে সে এত মুষড়ে পড়ল আর এত রেগে গেল যে দ্বিতীয় দিনের ভোজ সভায সে কিছু খেল না| তার রাগের কারণ, পিতা তাকে অপমান করেছিল এবং দায়ূদকে হত্যা করতে চায|
  • 35 পরদিন সকালে দাযূদের সঙ্গে যেমন ব্যবস্থা হয়েছিল সেভাবে য়োনাথন মাঠে গেল| য়োনাথন, একটা বালককে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিল|
  • 36 সে বালকটিকে বলল, “যা, যে তীরগুলো আমি ছুঁড়ছি সেগুলো কুড়িযে নিয়ে আয|” বালকটি ছুটতে লাগল, আর য়োনাথন তার মাথার উপর দিয়ে তীর ছুঁড়ল|
  • 37 তীরগুলো যেখানে পড়েছে সে দিকে বালকটি ছুটে গেল| কিন্তু য়োনাথন বলল, “তীর তো আরও দূরে|”
  • 38 য়োনাথন চেঁচিয়ে বলল, “তাড়াতাড়ি কর| তীরগুলো নিয়ে আয| ওখানে দাঁড়িয়ে থাকিস না|” বালকটি তীরগুলো কুড়িযে মনিবের কাছে এনে দিল|
  • 39 কি হচ্ছে তার সে কিছুই বুঝল না| জানত শুধু য়োনাথন আর দায়ূদ|
  • 40 য়োনাথন তীরধনুক বালকটির হাতে দিল| তারপর ওকে বলল, “যা! শহরে ফিরে যা|”
  • 41 বালকটি চলে গেলে দায়ূদ পাহাড়ের ওপাশে লুকোনো জায়গা থেকে বেরিয়ে এলো| য়োনাথনের কাছে এসে দায়ূদ মাটিতে মাথা নোযালেন| এরকম তিনবার তিনি মাথা নোযালেন| তারপর দুজন দুজনকে চুম্বন করল| দুজনেই খুব কান্নাকাটি করল| তবে দায়ূদই কাঁদলেন বেশী|
  • 42 য়োনাথন দায়ূদকে বলল, “যাও শান্তিতে যাও| প্রভুর নাম নিয়ে আমরা বন্ধু হয়েছিলাম| বলেছিলাম, তিনিই হবেন আমাদের দুজন ও পরবর্তী উত্তরপুরুষদের মধ্যে বন্ধুদের চিরকালের সাক্ষী|”